https://ift.tt/eA8V8J
কুয়েত সিটি, ৩১ আগস্ট- একটু ভালো করে বাঁচতে আর একটু স্বচ্ছল থাকার আশায় পরিবার ছেড়ে মা গিয়েছিলেন বিদেশে। দীর্ঘ ২৫ বছর কুয়েতে কর্মজীবন কাটছিল ঢাকার ধামরাইয়ের মমতা বেগমের। দুই বছর আগে মেয়ে স্বর্ণলতাকেও নিয়ে যান তার কাছে। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুরতায় কুয়েতে গত শুক্রবার (২৮ আগস্ট) মা-মেয়ে হত্যার শিকার হন। ওই দিনই বিয়ের কথা ছিল মেয়েটির। এদিকে মা-বোনকে হারিয়ে হতবাক পরিবারের একমাত্র সদস্য এজাজ আহমেদ। রবিবার (৩০ আগস্ট) ঢাকার ধামরাইয়ের পৌর এলাকার তালতলা মহল্লার মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল মান্নান শিকদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় নিস্তব্ধতা। কেবল প্রিয়জনের লাশের অপেক্ষায় সময় পাড় করছেন মমতা বেগমের ছেলে এজাজ। তিনি জানান, পারিবারিক স্বচ্ছলতার জন্যই ২৫ বছর আগে মা গিয়েছিলেন বিদেশে। পরে নিজ যোগ্যতায় কুয়েত সরকারের স্কুল বিভাগে চাকরি পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে দুই বছর আগে একমাত্র বোন স্বর্ণলতাকেও কুয়েতে নিয়ে যান। স্বর্ণলতা সেখানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতো। হঠাৎ গত মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যার পর থেকে তার মা মমতা বেগম ও বোন স্বর্ণলতার মোবাইল ফোন বন্ধ পান তিনি। এরপর শুক্রবার রাতে খবর আসে কুয়েতে তার মা ও বোন যে বাসায় থাকতেন, সেই বাসা থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে কুয়েত পুলিশ। তিনি বলেন, দেশে পাঠানোর জন্য তার মা ১০ লাখ টাকা কুয়েতের বাসায় রেখেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার সেই টাকা পাঠানোর কথা থাকলেও আর পাঠাননি। এছাড়া গত শুক্রবার পারিবারিকভাবেই কুয়েত প্রবাসী যশোরের রবিউল নামে একটি ছেলের সঙ্গে সেখানেই বোনের বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। আরও পড়ুন: কুয়েতে নিজ ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি মা-মেয়ে খুন ভাই এজাজ আহমেদকুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে তিনি যতটুকু জানতে পেরেছেন, ওই বাসায় দুর্বৃত্তরা লুটতরাজ চালিয়েছে। তার ধারণা, টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্রের লোভেই পরিচিতরাই তার মা-বোনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তাই চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চেয়ে দ্রুত তার মা ও বোনের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন এজাজ। ধামরাই থানার পরিদর্শক (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে। মা-মেয়ের মরদেহ দ্রুত দেশের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট কুয়েতের জেলিব আল সুখা এলাকায় নিজ বাসা থেকে ওই মা-মেয়ের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশ একটি হত্যা মামলা রেকর্ড করে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এম এন / ৩১ আগস্ট
https://ift.tt/2EwtJz3
0 Comments