https://ift.tt/eA8V8J
ঢাকা, ২৩ জুলাই- রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রতারক সাহেদ কেলেঙ্কারিতে অনেক প্রভাবশালীরা ফেঁসে যাচ্ছেন। তবে মজার ব্যাপার হলো যে সমস্ত প্রভাবশালীদের নাম আসছে সাহেদ কেলেঙ্কারিতে তাঁরা কেউ-ই রাজনীতিবিদ নন, সবাই প্রভাবশালী বর্তমান বা প্রাক্তন আমলা। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। উল্লেখ্য যে, গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলমের নেতৃত্বে ভুয়া করোনা রিপোর্ট প্রদানের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং সেখানে হাজার হাজার ভুয়া রিপোর্টের সন্ধান পাওয়া যায়। করোনা পরীক্ষা না করেই এই সমস্ত রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছিল। এরপর রিজেন্টের দুটি হাসপাতাল উত্তরা এবং মিরপুর সিলগালা করে দেয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং এই সমস্ত প্রতারণার মূল হোতা সাহেদকে খুঁজতে থাকে। এই সময় কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে আসে। দেখা যায় সাহেদ শুধু রিজেন্ট হাসপাতালকে ঘিরেই প্রতারণা করেনি, বরং সাহেদের প্রতারণার জাল ছিল সর্বব্যাপী। এই সাহেদ ২০১৬ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতারক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন এবং তাঁর সম্পর্কে সতর্কবার্তা জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অথচ সেই সাহেদই তাঁর নাম পরিবর্তন করে সমাজে একজন সুশীল বনে যান এবং সব ধরণের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হতে থাকেন। তাঁর নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয় প্রশাসনের সর্বত্র। এই প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে প্রতারণার জাল তিনি বিস্তৃত করতে থাকেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, সাহেদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে জমি দখল, অন্যের বাড়ি দখল, হোটেল দখলসহ নানারকম প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এই সমস্ত অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছে। জানা গেছে যে, সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চুক্তি করেছিল তাঁর পেছনে অনেক প্রভাবশালীদের হাত ছিল। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, সাবেক স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম ফোন করে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গেও সাহেদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। কারণ এই চুক্তির বাইরে গিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিজেন্ট হাসপাতালকে ডায়ালাইসিস মেশিনসহ বিপুল পরিমাণ সরকারি সামগ্রী সিএমএইচডি থেকে তুলে রিজেন্ট হাসপাতালকে দিয়েছিল। যে সামগ্রীগুলো সাহেদ বিক্রি করে দিয়েছে। আরো জানা গেছে যে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন সাবেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা বিভিন্ন জায়গায় টেলিফোন করে সাহেদের জন্য দেনদরবার এবং তদবির করেছেন। এরা সবাই সাহেদের পৃষ্ঠপোষক এবং মদদদাতা ছিলেন বলে জানা গেছে। আরও পড়ুন:গ্রেপ্তারের পর সাহেদের বিরুদ্ধে ঢাকায় ২০ মামলা দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, সাহেদের সঙ্গে সদ্য বিদায়ী স্বাস্থ্য ডিজি যে যুক্ত তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাঁরা শুধুমাত্র কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি রাখছে প্রাক্তন ডিজি আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তবে আবুল কালাম আজাদের একক উদ্যোগে এই সমস্ত অপকর্ম সংগঠিত হয়নি বলেই মনে করছে দুদকের সেই কর্মকর্তা। তাঁদের ধারণা এর পেছনে আরো প্রভাবশালী যুক্ত আছে। দুদক এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা যে সূত্রটি খুঁজছে তা হলো আসাদুল ইসলাম কেন সাহেদকে ফোন করেছিলেন এবং এটা খুঁজতে গিয়ে তাঁরা পেয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন সাবেক প্রভাবশালী কর্মকর্তা আসদুল ইসলামকে সাহেদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এবং সাহেদকে কাজে লাগানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে আসাদুল ইসলাম এই ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এই ঘটনায় যে বর্তমান পরিকল্পনা সচিবও ফেঁসে যাচ্ছেন তা মোটামুটি নিশ্চিত। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সেই কর্মকর্তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হবে এবং সাহেদ কেলেঙ্কারিতে তিনিও ফেঁসে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র: বাংলা ইনসাইডার আর/০৮:১৪/২৩ জুলাই
https://ift.tt/39n6Qsx
0 Comments