জামালপুরে ৫৩ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি ৭০ হাজার মানুষ

https://ift.tt/eA8V8J
জামালপুর, ২৯ জুন- ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। রবিবার (২৮ জুন) রাত ১০টা পর্যন্ত চার উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ৫৩ গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী এ তথ্য জানিয়েছেন। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান জানান, বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে রবিবার রাত ১০টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত চারদিন ধরে বন্যার পানি হু হু করে বাড়ছে। দ্রুতগতিতে বন্যার পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমিতে, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে এবং প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। চিনাডুলি ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম জানান, এ বছরের আগাম বন্যায় নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট বন্ধ এবং যমুনা চরাঞ্চল বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। নিম্নাঞ্চল এলাকায় বেশিরভাগ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ৪ হাজার পরিবারের প্রায় ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইসলামপুরে পরিস্থিতি অবনতি ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ইসলামপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার পানি দ্রুত বেড়েই চলেছে। এতে চিনাডুলি ইউপির দক্ষিণ চিনাডুলি, দেওয়ানপাড়া, ডেবরাইপ্যাচ, বলিয়াদহ, পশ্চিম বামনা, বেলগাছা ইউপির কছিমার চর, দেলীপাড়, গুঠাইল, সাপধরী ইউপির আকন্দপাড়া, পূর্ব চেঙ্গানিয়ার, পার্থশী ইউনিযনের মোজাআটা, জারুলতলা এবং নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কাজলা, কাঠমা, মাইজবাড়ী বন্যার পানি প্রবেশ করে পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। উপজেলার সাপধরী ইউপির চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, সাপধরী ইউনিয়নের নতুন চরাঞ্চল সমূহে আষাঢ় মাসেই অতিরিক্ত বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে প্রজাপতিচর, চরশিশুয়া, চরনন্দনেরপাড়া, আমতলী, কাশারীডোবাসহ চরাঞ্চলের ৫ হাজার বাড়ি-ঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। চরের অসংখ্য কৃষকের পাট ও আউশ ধান ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যেই বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ইসলামপুরের বেলগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, এ বছরের আগাম বন্যায় যমুনার বুকে জেগে ওঠা খোলাবাড়ী, বরুল, মন্নিয়া ও বেলগাছায় কৃষকের পাট ও ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ইসলামপুর ইউএনও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে সবাইকে নিয়ে বন্যা মোকাবিলায় কাজ করা হবে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জামাল আব্দুন নাছের বাবুল জানান, যমুনায় খুব দ্রুত গতিতে পানি বাড়ছে। সেই সঙ্গে ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীর পানিও বাড়ছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলা পরিষদ প্রস্তুত রয়েছে। জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, এরইমধ্যে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জের বন্যার্ত এলাকায় ২০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে এবং ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে ৩৫০ মেট্রিক টন জিআর চাল, ৭ লাখ নগদ টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট চাহিদা চেয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। বন্যার পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু জামালপুরের মাদারগঞ্জে বন্যার পানিতে পড়ে সোহান মিয়া (৭) নাম একটি শিশু মারা গেছে। সে উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। রবিবার সন্ধ্যায় বালিজুড়ী ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোহান হঠাৎ করে বন্যার পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজার পর তাকে পাওয়া যায়নি। রাত ৮টার দিকে শিশুটির লাশ ভেসে ওঠে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন আর/০৮:১৪/২৯ জুন
https://ift.tt/3idgzpq

Post a Comment

0 Comments