জমির অভাবে থমকে আছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের কাজ

https://ift.tt/eA8V8J
ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর- মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পের তিন বছর পার হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩৬০টি ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিন বছরে সমাপ্ত হয়েছে মাত্র ৮০টি জাদুঘরের নির্মাণকাজ। কিছু কিছু স্থানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের জমি পাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে ১৩৪টির জন্য কিছুতেই জমি মিলছে না। ফলে প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রকল্পের ব্যয় ১৮২ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু এখনো ১৩৪টি জাদুঘরের জায়গা মেলেনি। এর মধ্যে ১৭৫টির জন্য খাস জমি পাওয়ার কথা ছিল, সেটাও মেলেনি। ফলে আবারও বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদ। নতুন করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তালিকা প্রস্তুত করবে। জমি পাওয়ার পরই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল হালিম বলেন, এ পর্যন্ত ৮০টির কাজ সমাপ্ত করতে পেরেছি। কিন্ত ১৩৪টির জমি কিছুতেই পাচ্ছি না। জমি পাওয়ার বিষয়টি ঠিক করে মন্ত্রণালয় (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়)। আমরা (এলজিইডি) শুধু বাস্তবায়ন করে থাকি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় নতুন করে আবার তালিকা তৈরি করছে। জমি পাওয়ার পরেই কাজ শুরু হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ ও জাদুঘর নির্মাণের জন্য বেশ কিছু স্থানে জমি মিলছে না। প্রকল্পটি একবার ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে করোনা লকডাউনের কারণে জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখনো ১৭৫টি খাস জমি বন্দোবস্ত কিংবা জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কাজ চলমান আছে ১০৪টির, সমাপ্ত হয়েছে ৮০টির। ১৭৫টির জন্য খাস জমি না পাওয়ার কারণে প্রকল্পটির সময় বাড়ছে। কিছু কিছু জায়গা-জমি মিলছে। তবে ১৩৪টির জমি কোনভাবেই মিলছে না, ফলে নতুন করে তালিকা করা হচ্ছে। নতুন স্কিম প্রস্তাব করাসহ ২৩টি খাস জমি বন্দোবস্ত কিংবা জমি অধিগ্রহণের প্রচেষ্টা চলছে। তাই প্রকল্পটি জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হচ্ছে। প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৪০ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ। প্রকল্পের খরচ হয়েছে মাত্র ৫৫ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে জমির মূল্য গড় মৌজা মূল্যের তিনগুণ হওয়ায় ভূমি অধিগ্রহণের ব্যয়ভার বৃদ্ধি পেয়েছে, পূর্বে জমির মূল্য গড় মৌজা মূল্যের দেড়গুণ ছিল। ফলে জমির অধিগ্রহণের শতাংশ প্রতি একক মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের টাইপ অনুযায়ী ৩১৩টি স্মৃতিস্তম্ভ বি টাইপ যার বরাদ্দ ৩৫ লাখ টাকা। বি টাইপে দুটিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যার বরাদ্দ ২ কোটি টাকা করে। ৩৯টি হচ্ছে টাইপ-এ, যার বরাদ্দ ৫৮ লাখ ৭ হাজার টাকা। এ টাইপের মধ্যে ৬টির বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, এগুলোর প্রতিটির বরাদ্দ ১ কোটি ৭০ হাজার টাকা। টাইপ-এ, টাইপ-বি এবং বিশেষ টাইপ জাদুঘর ও স্মৃতিসৌধ পৃথকভাবে এলজিইডির নকশা ইউনিট থেকে ডিজাইন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আরও পড়ুন- পাটশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে কাজ হারাবে ৪ কোটি মানুষ সূত্র জানায়, স্থানীয় বীর মুক্তিযুদ্ধাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্যদের সুপারিশ অনুযায়ী ঐতিহাসিক স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গৌরব ও বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানাতে মুক্তিযুদ্ধের ৩৬০টি ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণের জন্য ১৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সরকার ৩৬০টি ঐতিহাসিক স্থানের প্রতিটিতে একটি করে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি জাদুঘরও নির্মাণ করবে। সূত্র: বাংলা নিউজ আডি/ ১০ সেপ্টেম্বর
https://ift.tt/3hohoud

Post a Comment

0 Comments