https://ift.tt/eA8V8J
ঢাকা, ২৫ আগস্ট - ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতের ১১টি ব্যাংক। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা। সোমবার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। ব্যাংকগুলো হলো- রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী, বেসিক ও অগ্রণী ব্যাংক এবং বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। আলোচিত সময়ে সরকারি চার ব্যাংকের ঘাটতি ছয় হাজার ১৩ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি সোনালী ব্যাংকের। জুন শেষে সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩১৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি ৯২০ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংকের ৮৯২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি ৮৮৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আরও পড়ুন: তিন মাসে খেলাপি ঋণ বাড়ল ৩৫০০ কোটি টাকা অন্যদিকে বেসরকারি খাতের সাত ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে চার হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতি ন্যাশনাল ব্যাংকের। জুন শেষে ব্যাংকটির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৯৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এছাড়া এবি ব্যাংকের এক হাজার ২১৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৫৬৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ২০৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২৪৪ কোটি টাকা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১৯৮ কোটি টাকা এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। অবশ্য বেশ কয়েকটি ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত (উদ্বৃত্ত) অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসাবে রাখায় সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ৬৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে সংরক্ষণ করা হয়েছে ৬০ হাজার ৯০০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ফলে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে মোট নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, আমানতকারীদের আমানত যাতে ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে। এর একটি হলো প্রভিশন সংরক্ষণ। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে পাঁচ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। নিম্নমান বা সাব স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা কুঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। ব্যাংকের আয় খাত থেকে অর্থ এনে এই প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, প্রভিশন ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন এন এইচ, ২৫ আগস্ট
https://ift.tt/3j9qTP1
0 Comments