https://ift.tt/eA8V8J
হবিগঞ্জ, ০৫ আগস্ট - মন্ত্রী, এমপি ও সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রতারণাকারী আফজল এখন পুলিশের খাঁচায় বন্দী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে চাকরি দেয়া, ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেয়া, বদলিসহ নানা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই প্রতারণা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু জেলা প্রশাসকের বাংলোয় গোপনে ঢুকে ছবি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট করলেই বিপত্তি ঘটে। সেখানে ধরা পড়ে মুচলেকা দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। গ্রেফতারের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৮টার দিকে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গোপনে জেলা প্রশাসকের বাংলোতে প্রবেশ করেন প্রতারক আফজাল হোসেন। বাংলোতে চেয়ারে বসে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। রাতেই বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের। পরে তার নির্দেশে প্রতারক আফজালের মোবাইল ট্রেকিং করে অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাকে ফোন করা হলে তিনি ভুয়া ঠিকানা প্রকাশ করেন। মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসনের লোকজনের নেতৃত্বে কৌশলে প্রতারক আফজাল ও তার সহযোগীদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির করা হয়। পরে ভুল স্বীকার করে মুচলেকা প্রদান করায় তাদেরকে মুক্তি দেয়া হয়। পুলিশ জানায়, প্রতারক আফজাল আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সদর থানা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হন। আফজলের প্রতারণার শিকার বিভিন্ন গ্রামের অর্ধশতাধিক লোক অবস্থান নেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে। এরই মধ্যে হবিগঞ্জ সদর থানায় প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শায়েস্তানগর এলাকার ঠিকাদার মোহাম্মদ টিপু। আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে নারীকে গলা কটে হত্যা, আটক ২ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শহরে বড় ধরনের কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক আফজাল। পরে তাকে গ্রেফতারের জন্য সদর মডেল থানার ওসি মো. মাসুক আলী ও ওসি তদন্ত দৌস মোহাম্মদের নেতৃত্বে পুলিশ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যায় আফজাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এদিকে আফজালের আটকের পর মুখ খুলতে শুরু করেন প্রতারণার শিকার লোকজন। অভিযোগে বেরিয়ে আসে তার প্রতারণার বিভিন্ন কাহিনী। দেশের বড় বড় মন্ত্রী, এমপি ও সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিতেন আফজাল। চাকরি, বদলি, ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেয়া, জামিনসহ বিভিন্ন তদবিরের নামে লোকজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আফজাল। সরকারের উপর মহলের সঙ্গে দহরম-মহরম রয়েছে এমন প্রচারণা চালাতেন আফজাল। তাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে সাহস করেনি কেউ। অবশেষে আটকের পর কয়েক ডজন প্রতারণার অভিযোগ আসে তার বিরুদ্ধে। প্রতারক শাহ আফজাল হোসেন সদর উপজেলার আউশপাড়া গ্রামের আব্দুল হেকিমের ছেলে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী জানান, আফজাল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কৌশলে ছবি তুলে তা ফেসবুকে প্রচার করত। মানুষকে বুঝাত তাদের সঙ্গে তার সখ্যতা রয়েছে। এরপর নানান তদবিরের কথা বলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একজন ব্যবসায়ী একটি মামলাও দায়ের করেছেন। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৫ আগস্ট
https://ift.tt/3gwzsm1
0 Comments