https://ift.tt/eA8V8J
ঢাকা, ১৯ জুলাই- দেশে বেসরকারি খাতের অন্যতম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ল্যাবএইড। হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিকেল কলেজ, ফার্মাসিউটিক্যালসহ সেবা খাতের একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় ল্যাবএইড গ্রুপের অধীনে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর অন্য সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মতো বড় ধরনের আঘাত এসেছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের গ্রুপটিতেও। করোনা সংকট শুরুর আগে ল্যাবএইড হাসপাতালে রোগীর ভিড় লেগে থাকলেও এখন সেখানে প্রায় অর্ধেক বেডই ফাঁকা। হাসপাতালটির আউটডোর রোগী নেমে এসেছে এক-পঞ্চমাংশে। রোগী কমায় ব্যবসায় বড় পতন হয়েছে ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকেরও। আয় কমে যাওয়ায় সারা দেশে ২৯টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধেই হিমশিম খেতে হচ্ছে ল্যাবএইডকে। সেই সঙ্গে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ল্যাবএইড গ্রুপের প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ব্যাংকঋণ পরিশোধের চিন্তাও। ব্যবসায় বড় পতনের এই চিত্র কেবল ল্যাবএইডের নয়। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৬০ শতাংশ কম ব্যবসা করছে পপুলার। একই পরিস্থিতি দেশের অন্য সব হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকেরও। যদিও করোনাভাইরাসের ধাক্কায় সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর একটি স্বাস্থ্যসেবা। আরও পড়ুন:রিজেন্টের মতো মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সে চলছে আরও অনেক হাসপাতাল! দেশের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিনিয়োগ, ব্যাংকঋণ, ব্যবসার টার্নওভারসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, দেশের মোট স্বাস্থ্য খাতের ৬৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো এ সংগঠনের সদস্য। আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০১৮ বুলেটিনের তথ্যমতে, দেশে নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে ৫ হাজার ৫৪টি। আর ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ৯ হাজার ৫২৯টি। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বেডসংখ্যা ৯০ হাজার ৫৮৭। স্বাভাবিক সময়ে এসব বেডের ৯০ শতাংশে রোগী ভর্তি থাকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সে চিত্র বদলে দিয়েছে। দেশব্যাপী মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার পরও এখনো অন্তত অর্ধেক বেড রোগীশূন্য। বিশাল সংখ্যার হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একটি অংশ গড়ে উঠেছে ব্যক্তি ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের দান ও সিএসআরের টাকায়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান বেড়ে উঠেছে ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের বড় অংশই তৈরি হয়েছে ব্যাংকঋণে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের মোট বিনিয়োগ লাখ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ব্যাংকঋণ রয়েছে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকা। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকে দেশের বেসরকারি সেবা খাতের মোট বিনিয়োগের পরিসংখ্যান থাকলেও হাসপাতাল-ক্লিনিকের তথ্য আলাদা করা হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৯ সাল শেষে সেবা খাতে মোট ব্যাংকঋণের পরিমাণ ছিল ৬৬ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। সেবা খাত বলতে হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পাশাপাশি হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুরসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিবেচনা করে ব্যাংকগুলো। আরও পড়ুন:জেকেজি ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের ১০ জনের জালিয়াত সিন্ডিকেট ব্যাংকাররা বলছেন, সেবা খাতের মোট ঋণের অর্ধেকই বেসরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের। বিশাল অংকের এ ব্যাংকঋণ নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যাংকার ও উদ্যোক্তারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও দেশের ২৫ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন ল্যাবএইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম। তিনি বলেন, ল্যাবএইড গ্রুপের বিনিয়োগ আছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে এক-চতুর্থাংশ ব্যাংকঋণ। মহামারীর আঘাতের শুরুর দুই মাসে দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকেরই ব্যবসা এক-পঞ্চমাংশ পতন হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে এ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ল্যাবএইডের ব্যবসা পরিস্থিতির উদাহরণ টেনে ডা. এ এম শামীম বলেন, এখনো ল্যাবএইড হাসপাতালের এক-তৃতীয়াংশ বেড ফাঁকা। আমাদের আউটডোরের রোগী কমেছে এক-পঞ্চমাংশ। আমরা কভিড-১৯ বিশেষায়িত ইউনিটও করেছি। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের ব্যবসায় যে বিপর্যয় নেমে এসেছে তাতে দেশের অন্তত ২৫ শতাংশ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে আশার কথা হলো, মহামারী দেশের স্বাস্থ্যসেবার দুর্বলতা ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উন্মোচিত করেছে। আশা করছি, নীতিনির্ধারকরা এখন স্বাস্থ্য খাতে বেশি নজর দেবেন। এতে দেশের স্বাস্থ্য খাত সমৃদ্ধ হবে। আর নিরাশার কথা হলো এখনো প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনার কোনো অর্থ আমরা ব্যাংক থেকে পাইনি। বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা ১০ হাজার হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সংগঠনটির সদস্য। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১২ লাখ কর্মীর। এর মধ্যে ৮০ হাজার চিকিৎসকের পাশাপাশি নার্স রয়েছেন ৬০ হাজার। হাসপাতাল, ক্লিনিকের বাইরে দেশে ৭০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ২৬টি ডেন্টাল কলেজ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ব্যবসায় বড় ধরনের বিপর্যয় হওয়ায় গত মার্চ থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন-ভাতা ঠিকমতো পরিশোধ করতে পারেনি। দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারও চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মীদের বেতন-ভাতা কমিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠিয়েছে। চাকরিচ্যুত হয়েছেন, এমন কর্মীর সংখ্যাও অনেক। আরও পড়ুন:শুধু স্বাস্থ্য খাত নয়, সাহেদের প্রতারণা শিক্ষা খাতেও ইউনাইটেড, পপুলার, স্কয়ারসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বেশকিছু হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে বড় অংকের ঋণ দিয়েছে পূবালী ব্যাংক। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ব্যাংকটির পাওনা রয়েছে ৫০২ কোটি টাকা। এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোকেও ৭১৫ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে ব্যাংকটি। দেখেশুনে বিনিয়োগ করার কারণে পূবালী ব্যাংকের ঋণ এখনো নিয়মিত আছে বলে জানান ব্যাংকটির শীর্ষ নির্বাহী মো. আব্দুল হালিম চৌধুরী। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে আমাদের বিনিয়োগ অভিজ্ঞতা সুখকর। করোনা পরিস্থিতিতেও আমাদের ঋণগুলোর কিস্তি আদায় হচ্ছে। কেউ কেউ এখনই টাকা দিতে না পারলেও ঋণ আদায়ে ঝুঁকি দেখছি না। তবে পূবালী ব্যাংকের মতো হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ঋণ দেয়ার অভিজ্ঞতা সুখকর হয়নি সাউথইস্ট ব্যাংকের ক্ষেত্রে। ব্যাংকটি স্বাস্থ্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ দিয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এ ঋণের বড় অংশই নাম লিখিয়েছে খেলাপির খাতায়। এর মধ্যে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের কাছে রয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ঋণ। কেয়ার হাসপাতালের কাছে ব্যাংকটির পাওনা ১৪০ কোটি টাকা। বড় অংকের এ দুটি ঋণই খেলাপির খাতায় উঠেছে বলে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। এ ঋণের বড় অংশই পেয়েছে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল। স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব-উল-আলম বলেন, হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পাশাপাশি আমরা হেলথকেয়ার, গ্লোব, ডেল্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ দিয়েছি। এসব প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাস প্রতিরোধী বিভিন্ন ওষুধ তৈরির সঙ্গে যুক্ত। এসব প্রতিষ্ঠানের একদিকের ব্যবসা কমলেও অন্যদিকে বেড়েছে। এজন্য বিনিয়োগ নিয়ে আমাদের তেমন দুশ্চিন্তা নেই। তবে দেশের বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকগুলোর ব্যবসায় বড় ক্ষতি হয়েছে। মাহবুব-উল-আলম জানান, ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের অধীনে সারা দেশে ১৯টি হাসপাতাল পরিচালিত হয়। মার্চ ও এপ্রিলে এসব হাসপাতালে রোগির সংখ্যা একেবারেই কমে গিয়েছিল। অন্যান্য ব্যবসাও প্রায় বন্ধ ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের হাসপাতালগুলো ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য না দিলেও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকের ব্যবসা এক-পঞ্চমাংশে নেমে এসেছে বলে জানান বাংলাদেশ বেসরকারি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিসিডিওএ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে করোনা আতঙ্ক কাজ করার ফলে ব্যবসা কমে এসেছে। এ অবস্থার মধ্যেও অনেক বেসরকারি হাসপাতাল তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী সেবা দিতে প্রস্তুত হয়েছে। তবে করোনাকালের প্রথম দিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, নানা জটিলতা আর পরিস্থিতি বুঝে না উঠতে পারার ফলে এমনটি হয়েছে। এছাড়া এই মহামারী স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করেছে যে বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালগুলো কাজ করার সুযোগ আছে বলে মনে করেন তিনি। আরও পড়ুন: চালু হচ্ছে সাইবার থানা, নেতৃত্বে অতিরিক্ত ডিআইজি সেবা খাতের বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যাংকঋণ নিয়ে বিপদগ্রস্ত বলে জানান বিপিসিডিওএর মহাপরিচালক ডা. মঈনুল আহসান, যিনি রাজধানীর গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্যোক্তাদের একজন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ১০০ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। ১০ বছর হয়ে গেছে আমরা এখনো এই ঋণ পরিশোধ করতে পারিনি। এর মধ্যে করোনার ধাক্কা এ খাতের অনেক প্রতিষ্ঠানকে আরো কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, এই অবস্থায়ও আমরা যথাসাধ্য সেবা দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। রোগী নেই তবুও স্টাফদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ সময় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে দেশের অন্যতম অবহেলিত খাত হিসেবে অভিহিত করে এ চিকিৎসক পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন। বেসরকারি হাসপাতালগুেলোর ব্যবসা কমে আসার ফলে ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটতে শুরু করেছে অনেক প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানও। এমন কথাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আজাদ আহমেদ। তিনি বলেন, রোগী না থাকার কারণে আমাদের ব্যবসা অনেকটাই মন্দা। এ পরিস্থিতিতে বেতন কমানো হয়েছে ৫০ শতাংশ। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সামনে বেতন-বোনাস পাওয়া যাবে কিনা, সেটা নিয়ে সংশয় আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ব্যবসা কমে যাওয়ার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন দেশের অন্যতম স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান পপুলার হাসপাতালের পরিচালক ডা. সুকুমার চন্দ্র। তিনি জানান, কিছুদিন আগে পরিস্থিতি আরো খারাপ ছিল। এখন কভিড রোগীদের সেবাদানের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি নিয়মিত রোগীদের সেবা চালু হচ্ছে। হাসপাতালে ৬০ শতাংশের মতো রোগী আসার ফলে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা হলেও মাথা তুলে দাঁড়ানোর পথে আছে বলে মনে করেন তিনি। দেশের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কিছু গবেষণা ও পরিসংখ্যান তৈরি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট। এ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হামিদ বলেন, দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলো সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের ওপর নির্ভরশীল। এজন্য মহামারীর এ সময়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলো চিকিৎসাসেবায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে সাধারণত সরকারি জ্যেষ্ঠ ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা সময় দেন। বয়স বেশি হওয়ায় তাদের অনেকে সরকারি হাসপাতালেই সেবা দেয়ার ঝুঁকি নেননি। সেখানে বেসরকারিভাবে সেবা প্রদানের তো প্রশ্নই আসে না। তবে ব্যতিক্রম যে নেই বিষয়টি এমনও নয়। বেসরকারি হাসপাতালের নিজস্ব জনবলের ঘাটতির কারণেই এ খাতে সেবা ব্যাহত হয়েছে। কভিড-১৯-পরবর্তী সময়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে আলাদা নীতিমালা তৈরি করতে হবে বলে অভিমত দেন এই বিশেষজ্ঞ।। এম এন / ১৯ জুলাই
https://ift.tt/2ODbrNN
0 Comments