https://ift.tt/eA8V8J
ফরিদপুর, ১৮ জুলাই- ছয় দিন আগে ফরিদপুরের সদর উপজেলার মল্লিকপুর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে জিয়াসমিন আক্তার (৩৫) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার জিয়াসমিন খুনের সঙ্গে জড়িত তার দ্বিতীয় স্বামীকে গ্রেপ্তারের পর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়। পুলিশ জানায়, ঘটনাটি তদন্তের এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সহায়তায় পশ্চিম নাখালপাড়া এলাকা থেকে জিয়াসমিনের দ্বিতীয় স্বামী আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বাড়ি ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার তাম্বুলখানা গ্রামে। তিনি ঢাকায় চ্যানেল আইয়ের গাড়িচালক। ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার স্বীকার করেছেন যে, ১০ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে জিয়াসমিনকে ফোন করে ফরিদপুরে আসতে বলেন তিনি। আসার আগে জিয়াসমিন তার ছোট বোনকে জানান যে, আনোয়ার সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে আম ও টাকা পাঠিয়েছে। সেসব আনতে যাচ্ছেন তিনি। এরপর আনোয়ার তার পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্য একজন সহযোগীসহ মাইক্রোবাসে সন্ধ্যায় ফরিদপুর শহরের আলিপুর কবরস্থানের কাছে পৌঁছান। সেখান থেকে জিয়াসমিনকে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেন। রাত অনুমান ১০টার দিকে মাইক্রোবাসের মধ্যে আনোয়ার তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। এরপর ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আখক্ষেতের পাশে লাশ ফেলে রেখে আবার ঢাকা চলে যান। ওসি আরও জানান, পুলিশ আনোয়ারকে মোবাইল ফোনে আম পাঠানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, তার এক বন্ধুর মাধ্যমে ৯ জুলাই সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে ১০ কেজি আম পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু ফরিদপুর সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের রেকর্ডপত্র ও সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে এর সত্যতা না পেয়ে এসএ পরিবহনের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা হয়। সেখানেও কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ। এরপর আনোয়ার ১৩ জুলাই মৃত স্ত্রী জিয়াসমিনের নামে মহাখালী এসএ পরিবহন অফিস থেকে ১০ কেজি আম পার্সেল করেন। পার্সেলটিপাওয়ার পর ফরিদপুরের এসএ পরিবহন অফিস থেকে পুলিশকে জানানো হয়, জিয়াসমিনের নামের একটা পার্সেল এসেছে। পুলিশ এসএ পরিবহন অফিসে গিয়ে দেখে, আম বুকিংয়ের তারিখ ১৩ জুলাই। এরপর পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, ইয়াসমিন হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী আনোয়ার জড়িত। সূত্র জানায়, আনোয়ারের প্রথম স্ত্রীর একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। অপরদিকে মৃত জিয়াসমিনের প্রথম স্বামীর ঘরে ১১ বছর বয়সের একটি মেয়ে আছে। দেড় বছরে আগে আনোয়ার গোপনে জিয়াসমিনকে বিয়ে করেন। এরপর তারা ফরিদপুর দক্ষিণ আলিপুর এক রুমের বাসা ভাড়া নেন।আনোয়ার ছুটিতে এলে জিয়াসমিন ভাড়া বাসায় থাকতেন। অন্য সময় জিয়াসমিন তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। দুই মাস ধরে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিতে ও তার বাড়িতে উঠাতে আনোয়ারকে চাপ দিয়ে আসছেন জিয়াসমিন। এর কারণে আনোয়ার তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। শুক্রবার সকালে ফরিদপুর শহরে আলিপুরের বাসা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসে স্বামীর পাঠানো আম আনতে যাওয়ার কথা বলে বের হন জিয়াসমিন।এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পায় পরিবারের সদস্যরা। রাতে বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা তাকে খুঁজতে থাকেন। পরে শনিবার সকালে মল্লিকপুর এলাকার রাস্তা সংলগ্ন আখক্ষেতের পাশ থেকে জিয়াসমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। জিয়াসমিন মধুখালী উপজেলার কারণ্যপুর এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। সূত্র : সমকাল এম এন / ১৮ জুলাই
https://ift.tt/2DLBnEL
0 Comments