https://ift.tt/eA8V8J
ঢাকা, ১৮ জুলাই- এসআরপি ট্রেডিং নামে একটি হিমায়িত মাংস আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। ফারুক হোসেন নামে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মীর বিরুদ্ধে প্রতারণা করে বিপুল এই অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে কোম্পানির পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করেছে পল্টন থানা পুলিশ। এসআরপি ট্রেডিংয়ের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী নাজমুল হাসান জানান, ২০১৮ সাল থেকে ফারুক তাদের প্রতিষ্ঠানে সহকারী ব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপনন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে চলতি বছরের শুরুতে তার অনিয়ম-দুর্নীতির কিছু তথ্য সামনে আসতে থাকে। কোম্পানির মালিক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী শরিফুল হাসান। হিমায়িত মাংস বিদেশ থেকে এনে কোল্ডস্টোরেজে রেখে বিক্রি করে আসছিল এই প্রতিষ্ঠান। হঠাৎ চলতি মাসের শুরুতে মাংস ক্রেতারা জানান, এসআরপির স্টোরেজ থেকে মাংস পাওয়া যাচ্ছে না। তখনই প্রতিষ্ঠানটির সবাই নড়েচড়ে বসেন। থার্ড পার্টির মাধ্যমে তেজগাঁও এলাকার একটি কোল্ড স্টোরেজে মাংস রাখা হত। সেখানে ১৬০ টন মাংস থাকার কথা ছিল। তবে অডিট শাখার লোকজন গিয়ে মাত্র ১৯ টন মাংস পান। এরমধ্যে ১০ টন মাংস অগ্রিম বিক্রি করে টাকা নেন ফারুক। স্টোরে থাকা অন্য কোম্পানির মাংস নিজ কোম্পানির মাংস বলে বিক্রি করে দেন তিনি। পুরো ঘটনার সঙ্গে স্টোরের একজন সদস্যও জড়িত। নির্বিঘ্নে জালিয়াতি করতে তাকেও মাসে মাসে মোটা অঙ্কের টাকা দিতেন ফারুক। নাজমুল হাসান আরও জানান, কোম্পানির সঙ্গে এমন ভয়াবহ জালিয়াতির বিষয় ধরা পড়ার পর ফারুকে শোকজ করা হয়। এরপর তাকে কোম্পানি থেকে বরখাস্ত করা হয়। কোম্পানির সঙ্গে ফারুকের সমঝোতা হয়, জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ তিনি ফেরত দেবেন। এরই মধ্যে ফারুক একটি ফ্ল্যাট কেনেন। ওই ফ্ল্যাটসহ সব মিলিয়ে দেড় কোটি টাকার মতো পরিশোধ করেন ফারুক। গত ২১ ফেব্রুুয়ারি ফারুকের স্ত্রী এসআরপি ট্রেডিংয়ের এক কর্মকর্তাকে ফোন করে জানান, তার স্বামীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তখন কোম্পানির লোকজন কিছুটা দ্বিধায় পড়ে যান। তাকে পাওয়া না গেলে কোম্পানির বাকি টাকা পাওয়া নিয়ে সংশয় বাড়ে। নিজেকে গা-ঢাকা দিয়ে কোম্পানির লোকজনকে ফাঁসাতে পারেন এমন সংশয়ও ছিল। এরপর এসআরপি ট্রেডিংয়ের লোকজন বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ গেছে- এটা জানার পর আবার ফারুক প্রকাশ্যে এসে কোম্পানিকে বাকি টাকা পরিশোধের আশ্বাস দেন। ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত কয়েক দফায় কিছু টাকা পরিশোধ করলেও ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা বাকি রেখে মোবাইল বন্ধ রেখে পরে পালিয়ে যান ফারুক। জানা গেছে, এসআরপির অর্থ কোম্পানির হিসাব নম্বরে না এনে নিজের একাউন্টে নিয়েছেন তিনি। অন্তত ২০টি ব্যাংকে তার নামে-বেনামে হিসাব নম্বর রয়েছে। এর আগে ফারুক আর কে ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার ছিলেন। ওই কোম্পানি থেকেও ১২ লাখ ১৫ হাজার ৩৪৮ টাকা চুরির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পল্টন থানার ওসি মো. সেন্টু মিয়া জানান, টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ফারুককে গত ১৩ জুলাই গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফারুকের স্ত্রীর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। সূত্র : সমকাল এম এন / ১৮ জুলাই
https://ift.tt/2ODnVFj
0 Comments