https://ift.tt/eA8V8J
হংকং, ০৫ জুলাই- হংকংয়ের বিশিষ্ট গণতন্ত্রকর্মীদের লেখা বইগুলো চীনা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির লাইব্রেরিগুলো থেকে অদৃশ্য হয়ে যেতে শুরু করেছে। অনলাইন রেকর্ডে দেখা গেছে, হংকংয়ের ওপর চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইন আরোপের কয়েক দিন পর থেকে বইগুলো উধাও হয়ে যাচ্ছে। যেসব লেখকদের শিরোনামগুলো আর পাওয়া যাচ্ছে না তাদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট জোশুয়া ওয়াং এবং গণতন্ত্রপন্থী আইনপ্রণেতা তানয়া চ্যান। এদিকে, হংকংয়ে নতুন নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান হিসাবে কমিউনিস্ট পার্টির কট্টরপন্থী এক কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়েছে চীন। খবর এএফপির। বেইজিংয়ের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন মঙ্গলবার কার্যকর করা হয়। ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন অঞ্চলটি চীনের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার পর আধা-স্বায়ত্তশাসিত শহরটি কিভাবে পরিচালিত হবে আইনটি তার মধ্যে সবচেয়ে আমূল পরিবর্তন। এ আইনের আওতায় হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কর্তৃপক্ষকে অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান করা হয়েছে। এরই মধ্যে শহরে আতঙ্ক শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা আইনের আওতায় পুলিশ বেশ কয়েকজনকে ধরপাকড় করার পর প্রথম একজনকে অভিযুক্ত করেছে। নতুন আইনবিরোধী বিক্ষোভের সময় হংকং মুক্ত করো স্লোগান লেখা প্রতীক বহনের জন্য টং ইং-কিট নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং বিচ্ছিন্নতাবাদ উস্কে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাধীনতাকামীদের নিদর্শনগুলো অপসারণের খেলা শুরু করেছে চীন। ওয়াং বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে সুরক্ষা আইনের আওতায় বইগুলো অপসারণ করা হয়েছে। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, হোয়াইট সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়া অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা আইন মূলত বাকস্বাধীনতা খর্বের একটি হাতিয়ার। পাবলিক লাইব্রেরির ওয়েবসাইটে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ওয়াং, চ্যান এবং স্থানীয় পণ্ডিত চিন ওয়ানের কমপক্ষে তিনটি শিরোনাম শহরজুড়ে কয়েক ডজন আউটলেট থেকে উধাও হয়ে গেছে। শনিবার বিকালে ওয়াং তাই পাপ জেলার একটি পাবলিক লাইব্রেরিতে শিরোনামগুলো খুঁজে পাননি এএফপি রিপোর্টার। হংকংয়ে নতুন নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান হিসাবে কমিউনিস্ট পার্টির জ্যাং ইয়ানশিওংকে শুক্রবার নিয়োগ দিয়েছে চীন। দেশটির নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বাস্তবায়ন তদারক করতে হংকংয়ে স্থাপন করা হচ্ছে শক্তিশালী নতুন নিরাপত্তা সংস্থা। চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় উকান গ্রামে ২০১১ সালে ভূমিবিরোধ নিয়ে বিক্ষোভ কঠোরপন্থায় দমনের জন্য পরিচিত ইয়ানশিওং। তিনি এ পর্যন্ত চীনের গুয়াংডং প্রদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কমিটির মহাসচিব পদে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। হংকং সরকার এরই মধ্যে তাদের একটি নিজস্ব জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছে। এ কমিটির প্রধান নির্বাহী লাম শেং ইউত। আর হংকংয়ের নেতার স্থানীয় এই কমিটি বিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন সেখানকার বেইজিং লিয়াজোঁ কার্যালয়ের পরিচালক লু হুইনিং। নতুন নিরাপত্তা আইনে ঝুঁকিতে রয়েছেন বিদেশি নাগরিকরাও। হংকংয়ের অধিবাসী নন এমনকি চীনা নাগরিকও নন এমন যে কোনো বিদেশি ব্যক্তি হংকং ইস্যুতে চীন সরকারের সমালোচনা করলে এই আইনের আওতায় পড়বেন। এমনকি তিনি যদি যাত্রাবিরতিতেও হংকং বিমানবন্দরে নামেন তাও তিনি গ্রেফতারের ঝুঁকির মধ্যে থাকবেন। সিএনএন। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে চীনা-অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত বাদিউকো বলেন, এটি ভয়ঙ্কর এবং উদ্বেগজনক। শুধু হংকংবাসীর জন্যই নয় বরঞ্চ যারা হংকং এবং চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা করেন তাদের জন্যও। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম সমালোচক বাদিউকো আরও বলেন, গ্রেফতারের আশঙ্কায় এখন থেকে আর হংকং বিমানবন্দরে নামবেন না তিনি। সূত্র : যুগান্তর এম এন / ০৫ জুলাই
https://ift.tt/3eW3xdY
0 Comments