https://ift.tt/eA8V8J
যশোর, ৯ মে- যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তাদের আপত্তি আমলে নেননি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। বেশি পজিটিভ রেজাল্ট আসছে বলেই কি ল্যাবে পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হবে- তাদের উদ্দেশে এই প্রশ্ন করেছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে যশোর সার্কিট হাউসে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পরীক্ষা নিয়ে সিভিল সার্জনসহ বেশ কয়েকজন আপত্তি তোলেন।ওই ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় সঠিক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না দাবি করে সেখানে পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মত দেন তারা। যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের সভাপতিত্বে সভায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষা বন্ধের দাবির পেছনে যুক্তি হিসেবে ওই ল্যাবে বেশি পজিটিভ রেজাল্ট আসার কথা কেউ কেউ বলেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক। যশোরের সন্তান প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য সেখানেই স্বাস্থ্য বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, সরকারের পলিসি হল- আরও বেশি পরীক্ষা করা, ল্যাব বন্ধ করা নয়। সভায় আমি বলেছি, যবিপ্রবি ল্যাবে অথবা পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় যদি কোনো ফল্ট থাকে, তাহলে তা যাচাই করা যেতে পারে। বেশি বেশি পজেটিভ রেজাল্ট আসছে বলেই কি ল্যাবে পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হবে?, প্রশ্ন করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সচিব বিষয়টি শুনেছেন। আমার মনে হয় উনি দুই-একদিনের মধ্যে যশোরে বিশেষজ্ঞ টিম পাঠাবেন। যদিও করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞ সঙ্কট রয়েছে বলে সচিব জানিয়েছেন। সভায় কে কে যবিপ্রবি ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন জানতে চাইলে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, তিনি ছাড়াও বিএমএ সেক্রেটারি ডা. এম এ বাশার আপত্তি তুলেছেন। স্বাস্থ্য সচিব বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হলে স্বাগত জানাবেন বলে জানিয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার কোনো আপত্তি নেই। আগেই বলেছি, আমাদের পরীক্ষা সম্বন্ধে আমি খুবই কনফিডেন্ট। আমরা গবেষণা করি। রোগ নির্ণয় করা আমাদের কাজ না। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আমরা স্বেচ্ছাসেবা দিচ্ছি। নমুনা পাঠানো বন্ধ করে দিলেই তো আমাদের ল্যাবে আর কোভিড-১৯ নির্ণয়ের কাজ হবে না। যশোর সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ জেলার মোট ৯৭৪টি নমুনা পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে যবিপ্রবির পরীক্ষাগারে গেছে ৪৮৩টি আর খুলনা মেডিকেল কলেজের পরীক্ষাগারে ৪৯১টি পাঠানো হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে ৪৮৭টি নমুনার পরীক্ষার ফলাফলে চারটিতে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। অপরদিকে যবিপ্রবি পরীক্ষাগারে ৩৮৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৬টি পজিটিভ এসেছে। শুক্রবার আরও ১৪টি নমুনা পরীক্ষায় তিনজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা ও যশোরে পরীক্ষার ফল ভিন্ন ঝিনাইদহের ১৫ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল ঢাকা ও যশোরের ল্যাবে দুই রকম এসেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও এসব নমুনা একই দিনে সংগ্রহ করা নয়। ঝিনাইদহ থেকে করোনাভাইরাস সন্দেহে কয়েকজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযৃক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক নরোজ কুমার নাথ জানান, সেখান থেকে করোনাভাইরাস পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তাদেরকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, যশোরের রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ হলে ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। তাদের নির্দেশে ৩-৪ দিন পর ৩০ জনের নমুনা আবার সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে শুক্রবার ভোরে ১৫ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য এ ১৫ জনের নমুনা ফের সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। বাকি ১৫ জনের রিপোর্ট এখনও আসেনি বলে জানান তিনি। সূত্র: বিডিনিউজ আর/০৮:১৪/০৯ মে
https://ift.tt/3bmXQ6t
0 Comments