https://ift.tt/eA8V8J
নাইরোবি, ০৩ মে - ইতিহাসের পাতায় কিংবা কোনো গল্প-উপন্যাসে দেখা যায়, খাবারের অভাবে সন্তানের কান্না থামাতে চুলায় পাথর সেদ্ধ করতে দিয়েছেন মা। কিন্তু এই সময়েও এমন দৃশ্য দেখতে হবে তা ছিল মানুষের কল্পনারও বাইরে। করোনাভাইরাসের কারণে এই দৃশ্য দেখতে হলো বিশ্ববাসীকে। করোনার প্রভাবে দারিদ্রসীমার নিচে চলে যাবে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ, এই শঙ্কা প্রকাশ করছে জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থা। এরই মধ্যে আফ্রিকান দেশ কেনিয়ার মোম্বাসায় দেখা গেল হৃদয়বিদারক এই দৃশ্য। ঘরে খাবার নেই। আটটি শিশু। ক্ষুধায় কাঁদছে ছোট মেয়েটি। সন্তানের কান্না থামানো অসহ্য হয়ে পড়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে বুঝ দিতে মা চুলা জ্বালালেন। এরপর সেখানে পাত্র বসিয়ে তাতে কয়েকটি পাথর ঢাললেন। সেগুলোকেই নাড়তে শুরু করলেন। অবুঝ শিশুকে বোঝালেন, খাবার রান্না হচ্ছে, একটু পরই সেটা খেতে দেয়া হবে। শিশুটি কিছু না বুঝেই ক্ষণিকের জন্য কান্না থামালো। মায়ের চিন্তা, খাবারের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে মেয়েটি যদি কিছুক্ষণের জন্যে ঘুমিয়ে পড়ে, তাহলে এই যন্ত্রণা থেকে খানিকটা হলেও রেহাই পাবেন তিনি। কেনিয়ান সংবাদমাধ্যম পুরো ঘটনা জানিয়েছে। এসব সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেনিয়ান মোম্বাসার বাসিন্দা পেনিনা বাহাতি কিটসাও। বছর খানেক আগে ডাকাতের হাতে নিহত হয়েছেন তার স্বামী। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান পেনিনা। ছোট্ট একটা ঘরে আটটি শিশু নিয়ে থাকেন। যেখানে পানি এবং বিদ্যুতের অভাব। করোনাভাইরাসে লকডাউনের জেরে এই সময়ে কাজও হারিয়ে বসেছেন তিনি। অন্য ছেলেমেয়েগুলো বুঝেছে, মায়ের এখন কাজ নেই। এ কারণে হয়তো রোজ খাওয়া জুটবে না। তারা তো মানিয়েও নিয়েছে, কিন্তু ছোট্ট শিশুটি, ওকে বোঝাবে, কার সাধ্যি! ছোট্ট মেয়ের কান্না থামাতে শেষ পর্যন্ত পাথর সেদ্ধ বসাতে হল মাকে। পুরো ঘটনাটা নজর এড়ায়নি প্রতিবেশি প্রিস্কা মোমানভির। কেনিয়ান সংবাদমাধ্যমকে খবর দেন তিনি। নিজেও পেনিনার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেন। এরপর থেকেই তার অ্যাকাউন্টে সাহায্য আসা শুরু হয়। খাবারের অবাব দূর হয়ে যায় পেনিনার। যদিও পুরো ঘটনাটাই অলৌকিক ঠেকেছে পেনিনার কাছে। বলছেন, কেনিয়ার লোকেরা এত ভালবাসতে পারে আমি কখনও ভাবিনি। পুরো দেশ থেকে মানুষ জানতে চাচ্ছে, তারা আমার জন্য কী করতে পারেন। করোনায় লকডাউনে আটকে পড়া মানুষকে খাবার জোগানোর জন্য একটি প্রকল্প চালু করেছে কেনিয়া সরকার। কিন্তু বহু লোকের কাছে এখনও সাহায্য পৌঁছায়নি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৩ মে
https://ift.tt/3aVpTt9
0 Comments