বল টেম্পারিংকে বৈধতা দেয়ার পক্ষে সুজন-রুবেল!

https://ift.tt/eA8V8J
ঢাকা, ২৯ এপ্রিল - করোনা শুধু জীবন সংহারি ভাইরাস নয়। করোনা সংক্রমণে তরতাজা প্রাণ ঝরে পড়ছে প্রতিনিয়ত। পাশপাশি গোটা বিশ্ব থমকে দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিক জীবনযাপন গেছে পাল্টে। সবকিছুই বন্ধ। এদিকে করোনার প্রভাবে খেটে খাওয়া দিন মজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। করোনার প্রভাবে সারা বিশ্বের সব কিছুর মত খেলাধুলাও বন্ধ। সবাই অধীর অপেক্ষায়, কবে এই প্রাণসংহারি করোনা মুক্ত হবে সারাবিশ্ব? করোনার ভয়াবহতা না কমা পর্যন্ত বন্ধ সব ধরনের খেলা। করোনা সংক্রমণ কেটে গেলে আবার সরব হবে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন; কিন্তু সেটা কবে? কারো পক্ষেই আগাম বলা সম্ভব নয়। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন, কবে এ বিশ্ব করোনামুক্ত হবে? করোনাভাইরাসের কারণে সুদুর প্রসারী প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে ক্রিকেটে। ক্রিকেটারদের শরীর স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি এরই মধ্যে একটা অবৈধ বিষয়কে বৈধতা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। সেই অবৈধ বিষয়টি হচ্ছে বল টেম্পারিং। টেস্ট ম্যাচে পেসাররা বলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে থুতু কিংবা লালা লাগিয়ে ট্রাউজারে ঘঁষে নেয়। এখন করোনার কারণে বলে মুখের থুতু আর লালা নিরাপদ নয়। সে কারণেই অন্য কোনো উপায়ে বলের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা করছে আইসিসি। বলার অপেক্ষা রাখে না ক্রিকেটে বলের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে এবং সুইং বাড়াতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব ক্রিকেটার বিশেষ করে পেস বোলাররা বলে থুতু ব্যবহার করেন এবং এটা বলের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখার সবচেয়ে পুরনো ও কার্যকর কৌশল। কিন্তু এই থুতু আর লালা বলে লাগানো থেকে জীবানু সংক্রমিত হবার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তাই আইসিসির মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে এই চিরায়ত প্রথা বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। আইসিসিও বলে তাই থুতু আর লালা লাগানো নিষেধ করে ভিন্ন উপায়ে বলে উজ্জলতা বাড়ানোর চিন্তা করছে। ক্রিকেটারদের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে এবং সংক্রমণ রোধে আইসিসির এ প্রস্তাব নিঃসন্দেহে সময়োচিত ও দুরদর্শি। তবে পাশাপাশি এতে করে পেসারদের বলের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখার একটি পুরনো কৌশলও বন্ধ হয়ে যাবে। তখন তারা কি করবেন? আইসিসি থেকে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে, বলের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে কৃত্রিম কোন ব্যবস্থা চালু করা হবে। মূলতঃ এটাকেই বলা হচ্ছে, বল টেম্পারিংকে বৈধতা দেয়া। যা নিয়ে এখন ক্রিকেট বিশ্বে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। একপক্ষ এর পক্ষে, আরেকপক্ষ এর বিপক্ষে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক পেসার খালেদ মাহমুদ সুজন আর বর্তমানে দেশের অন্যতম সেরা পেসার রুবেল হোসেন মনে করেন ভ্যাসলিনই হতে পারে থুতু কিংবা লালার পরিবর্তে সম্ভাব্য সেরা বিকল্প। সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের অনুভব, থুতু আর লালা বন্ধের সিদ্ধান্ত ঠিকই আছে; কিন্তু পেসারদের বলের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখতে বিকল্প পথও খুলে দিতে হবে। অন্যথায় তারা বেকায়দায় পড়ে যাবেন। তিনি সঙ্গে যোগ করেন, এমন নয় ভ্যাসলিনের ব্যবহার নতুন হবে। এমনিতেই অনেক দেশের বোলাররা লুকিয়ে লুকিয়ে ভ্যাসলিন ব্যবহার করেন এবং বলের পলিশ ঠিক রেখে সুইং করানোর জন্য অনেক আগে থেকেই ভ্যাসলিনের ব্যবহার হয়ে আসছে। এখন অনেক টিভি ক্যামেরা তাক করা থাকে। এক সময় প্রযুক্তি এত আধুনিক ছিল না। খেলা সম্প্রচারে এত ক্যামেরাও ব্যবহার করা হতো না। তখন খানিক লুকিয়ে-ছুকিয়ে অনেক কিছুই চলতো। এই যেমন বলে, ভ্যাসলিন মাখা ছিল প্রায় নিত্য দিনকার কাজ। অনেক দেশের পেসার বোলারররই ট্রাউজার্সের পকেটে ভ্যাসলিন রেখে দিতেন। বল হাতে নেয়ার আগে হাতে ভ্যাসলিন মেখে তারপর বলে ঘঁষে দিতেন। তাতে বলের ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হতো না। কাজেই আমার মনে হয়, ভ্যাসলিন ব্যবহারের অনুমতি দিলেই ল্যাঠা চুকে যাবে। তখন বলে থুতুও লাগবে না। বলের ঔজ্জ্বল্যও ধরে রাখা সম্ভব হবে। এদিকে খালেদ মাহমুদ সুজনের সাথে প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন রুবেল হোসেনও। দেশের ক্রিকেটে সব ফরম্যাটের অন্যতম কার্যকর জাতীয় দলের এই দ্রুত গতির বোলার মনে করেন, বলে থুতু লাগাতে না দিলে একটা ভাল বিকল্প দেয়া খুব দরকার। না হয় পেসারারা খুব বিপাকে পড়ে যাবেন। রুবেল বলেন, যে কোনো বোলার বিশেষ করে পেসাররা বল হাতে নিয়েই থুতু লাগাতে শুরু করেন। সেটা বলের ঔজ্জ্বল্য ধরে রেখে সুইং করানোর কথা ভেবেই। এমনি এমনি নয়। এখন স্বাস্থ্য সচেতনতার কারণে এবং ক্রিকেটারদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমনের শঙ্কায় সেই অনেকদিন ধরে চলে আসা বলে থুতু লাগানো বন্ধ করা হলে অবশ্যই একটি কার্যকর বিকল্প দেয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে রুবেলও মনে করেন ভ্যাসলিন হতে পারে বেটার অপশন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রুবেল বলেন, অবশ্যই ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা ভেবেই নিশ্চয়ই আইসিসি বলে থুতু ও লালা ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে (মূলতঃ প্রস্তাব দিয়েছে); কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, এটা খুবই দরকারি ও এবং কার্যকরি। প্রতিটি বোলার বলের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখতে এই থুতু ও লালা ব্যবহার করে থাকেন। এখন করোনা আতঙ্ক আর ভাইরাস সংক্রমণের চিন্তা, শঙ্কা যতই কাজ করুক না কেন, এর একটি বিকল্প পন্থা খুঁজে বের করতেই হবে এবং সেটা আইসিসিকেই করতে হবে। রুবেলের শেষ কথা, ভ্যাসলিনই হতে পারে খুব ভাল বিকল্প। যা দিয়ে বলের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখা যায় অনেকটাই। এর পাশাপাশি আরও কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করা যায় কিনা- সেটাও ভেবে দেখতে হবে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৯ এপ্রিল
https://ift.tt/2YgvQ1q

Post a Comment

0 Comments