বল টেম্পারিংকে বৈধতা দেয়ার কোনো যুক্তিই খুঁজে পাচ্ছেন না তারা

https://ift.tt/eA8V8J
ঢাকা, ২৯ এপ্রিল - করোনাভাইরাসের কারণে পুরো পৃথিবীরই যেন খোলনলচে বদলে যাবে- এটা অনেকেই বলছেন। অন্যসব কিছুর মত খেলাধুলাও যে পুরোপুরি পাল্টে যাচ্ছে, তা বলাই বাহূল্য। ইতিমধ্যেই করোনার কারণে বল টেম্পারিংকে আইনি বৈধতা দেয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছে আইসিসি। কয়েকদিন আগেই এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটে লাল বলের একদিকে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে রিভার্স সুইং করানোর জন্য মুখের থুতু কিংবা লালা দিয়ে বলকে ঘঁষা হতো। কিন্তু করোনাভাইরাস থুতু কিংবা মুখের লালা ব্যবহার নিয়ে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। আইসিসির মেডিক্যাল টিম, এ বিষয়ে ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতা জারি করেছে। এ অবস্থায় আইসিসি চিন্তা করছে বৈধ কোনো উপায়ে যেন বলের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর কাজ করা যায়, সে বিষয়টা খুঁজে বের করা। এ ক্ষেত্রে যদি বল টেম্পারিংয়ের মত অবৈধ কাজকেও বৈধতা দিতে হয়, তাহলে তাও দেয়া হবে। তবে বলের উজ্জ্বলতা বাড়ানো হবে যে পদার্থ দিয়ে, তা তদারকির দায়িত্ব পড়বে সম্পূর্ণ মাঠের আম্পায়ারদের ওপর। আইসিসি এখনও এই আইন পাশ করেনি। তবে যেহেতু আলাপ উঠেছে এবং আইসিসি থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে- সে কারণে আলোচনা চলছে এ নিয়ে। পক্ষে-বিপক্ষে আসছে নানা মতামত। তবে আইসিসির এই প্রস্তাবিত নিয়মের বিষয়ে কোনো যৌক্তিকতাই খুঁজে পাচ্ছেন না দুই কিংবদন্তি পেসার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাইকেল হোল্ডিং এবং পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনুস। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার অ্যালান ডোনাল্ডও এই প্রস্তাবের সম্পূর্ণ বিরোধী। মাইকেল হোল্ডিং পুরো বিষয়টাকে স্ববিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, আইসিসির এই প্রস্তাবটি আমি দেখেছি এবং পড়েছি। কোভিড-১৯ এর কারণে বোলারদেরকে বলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে থুতু কিংবা লালা ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। পরিবর্তে বাইরের কোনো কৃত্রিম পদার্থ ব্যবহার করাকে বৈধতা দেয়া হবে। এই নিয়ম তৈরি কেন করা হচ্ছে, এর পেছনের কোনো যৌক্তিকতা আমি খুঁজে পাচ্ছি না। একই সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তী আইসিসির কাছে প্রশ্ন রাখেন, যে বিষয়টা এতদিন অবৈধ ছিল, সেটার বিষয়ে এখন কেন আইসিসি দ্বৈতনীতি অবলম্বন করছে? তিনি বলেন, তারা আগে একটা পয়েন্ট নির্ধারণ করে নিয়েছে যে, আবার ক্রিকেট শুরু হলে তারা একটি পরিবেশবান্ধব পরিস্থিতিতে সেটা শুরু করতে চায়। আইসিসির আরো সমালোচনা করে তিনি বলেন, আইসিসি এখন বলছে কি, কোনো ম্যাচ শুরুর আগে ক্রিকেটাররা যেন দুই সপ্তাহ ঘরবন্দী থাকে। এরপর যখন দেখা যাবে সব কিছু ঠিক, তখন ক্রিকেটাররা জানতে পারবে তারা কোন ভেন্যুতে খেলবে। এরপর সবাই আবার ম্যাচ খেলতে নেমে যাবে আগের মতই। অর্থ্যাৎ, আগের মতই সব কিছু হবে। কিন্তু তার আগে শুধু শুধু কষ্টকর একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হবে। হোল্ডিং একটা বিষয় বুঝতে পারছেন না, যে ক্রিকেটারদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে এরপর ক্রিকেট খেলতে নামানো হবে, তাহলে কেন বলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে তাদেরকে থুতু ব্যবহার করতে দেয়া হবে না? কোয়ারেন্টাইনের পর তো সব চেক করেই মাঠে নামানো হবে। প্রশ্ন তুলে মাইকেল হোল্ডিং বলেন, এখন আপনি যদি একটা সুরক্ষিত পরিবেশে ক্রিকেট চালু করবেন বলেন, তাহলে আপনারা থাকছেন একই হোটেলে এবং বাইরে কোথাও আপনাদের যাওয়ার সুযোগ নেই এবং সুরক্ষিত পরিবেশেই ক্রিকেট খেলবেন, তাহলে কেন কারো কারো থুতু কিংবা লালা নিয়ে আপনাদের এত ভয়? পরক্ষণে তিনি বলেন, মাঠে খেলার জন্য সে সব ক্রিকেটারকেই নামানো হবে, যারা কোভিড-১৯ মুক্ত। যদি আইসিসি চিন্তা করে যে, দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইনে থাকাটা যথেষ্ট নয়, তাহলে এটার অর্থ এই দাঁড়ায় যে, প্রত্যেককে আইসিসি জোর করেই ১৪ দিনের বন্দিত্ব বরণ করতে বাধ্য করছে। হোল্ডিং বলেন, এতই যখন সমস্যা, তাহলে ক্রিকেট শুরু করার প্রয়োজন কি? তিনি প্রশ্ন করে বলেন, তাহলে এ ধরনের পরিস্থিতিতে কেন ক্রিকেট খেলার প্রয়োজন হবে? যখন এই পরিবেশটাই সুরক্ষিত নয়! প্লিজ কোনো অনুমানের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেবেন না। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক এবং পেসার ওয়াকার ইউনুস বলেন, টেস্ট ক্রিকেটে বোলারদের জন্য থুতু কিংবা লালা ব্যবহার করে বলের উজ্জ্বলতা বাড়ানোটা অবশ্যম্ভাবী। একজন ফাস্ট বোলার হিসেবে আমি এই প্রস্তাবকে পুরোপুরি প্রত্যাক্ষ্যান করছি। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আর একটি বলতো এমনিতেই সারাদিন কতজনের হাত ঘুরতেছে। বল ধরার জন্য কতজন এর পেছনে দৌড়াচ্ছে। এমনিতেই হাঁচি-কাশি দেয়া হয়। সে সময়ও তো বল ধরা হয়। কিন্তু থুতু কিংবা লালা লাগিয়ে বলে উজ্জ্বলতা বাড়ানো একটা প্রাকৃতিক অভ্যাস। অন্য কোনো কিছু দিয়ে এটাকে নিয়ন্ত্রন করা যাবে না। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৯ এপ্রিল
https://ift.tt/35j6p0r

Post a Comment

0 Comments