চিকিৎসা অবহেলায় ওসির স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ

যশোর, ১০ এপ্রিল - নড়াইলের নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুনের স্বামী আহসানুল ইসলাম যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে যশোর হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। কার্ডিয়াক অ্যাটাকে অসুস্থ হওয়ায় তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল। ওসি রোকসানা খাতুন স্বামীর মৃত্যুর জন্য চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে বরং তারা স্বজনদের গাফিলতির দিকে আঙুল তুলছেন। নড়াইলের নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কোনো থানার প্রথম নারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তার স্বামী আহসানুল ইসলাম রেলওয়ে কর্মী; যিনি বেনাপোলে কর্মরত ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে আসেন ওসি রোকসানা খাতুন। আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, এই শুনছ, তোমার মেয়ে নিয়ে এখন আমি কী করব? তোমার মেয়ে একা একা খায় না তুমি ছাড়া। এই ডাক্তাররা কোনো ট্রিটমেন্ট দিল না। পুলিশ এত সেবা দিচ্ছে অথচ পুলিশ পরিবার আজ সেবা পাচ্ছে না। স্বামীর লাশের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও অভিযোগ করেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় তার স্বামীর (৪৮) মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, আমি এত লোকের সেবা করে বেড়াচ্ছি, অথচ শুধু ডাক্তারের অবহেলায় আমার স্বামী মারা গেল। আমার সন্তানরা এতিম হলো। জরুরি এই রোগীকে অক্সিজেন না দেয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা কিছুই করেনি। তারা ওয়ার্ডে রেখে চলে গেছে। না কোনো ডাক্তার, না কোনো আয়া। আমার দুনিয়াডা অন্ধকার করে দিল ডাক্তারদের অবহেলা। ওসি রোকসানা খাতুন জানান, তার স্বামী আহসানুল ইসলাম বাংলাদেশ রেলওয়েতে বেনাপোলে পি ম্যান হিসেবে কর্মরত। তিনি যশোর কোতয়ালী থানার স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করে স্বামী আহসানুলের বুকে ব্যথা ওঠে, দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। কিছু সময়ের মধ্যে তিনি যশোর কোতয়ালী থানার ওসিকে ফোন দিয়ে তার স্বামীকে হাসপাতালে পাঠান। যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ তাকে ভর্তি নিয়ে করোনারি কেয়ার ইউনিটের সিসিইউ ওয়ার্ডে পাঠায়। এই নারী কর্মকর্তার অভিযোগ, সেই সময় দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসক ওষুধ লিখে রোগীর পায়ের কাছে স্লিপ রেখে চলে যান। শ্বাসকষ্ট হলেও তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়নি। তিনি আরও জানান, পরে ফোন দিলে তার স্বামী ফোন রিসিভ করেননি। পাশের বেডের রোগীর স্বজনরা ফোন ধরে চিকিৎসায় অবহেলার কথা জানান এবং বলেন, রোগীর অবস্থা খুব খারাপ। ওষুধ আনতে হবে। এ সময় পাশের বেডের রোগীর স্বজনদের তিনি ওষুধ কিনে আনতেও অনুরোধ করেন। পরে তিনি স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার অনুযায়ী সকাল ১০টার দিকে ওই রোগী মারা যান। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা দাবি করছেন, কার্ডিয়াক অ্যাটাকে মারা যাওয়া ওই রোগীর চিকিৎসায় কোনো অবহেলা করা হয়নি। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় বলেন, করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তির পর চিকিৎসক তাকে দেখে চিকিৎসাপত্র দেন। হাসপাতাল থেকে যা সরবরাহ করার, তা রোগীকে দেয়া হয়। কিন্তু বাইরে থেকে ওষুধ আনার দরকার ছিল। তবে রোগীর পাশে তার কোনো লোক না থাকায় সেটা আনা হয়নি। তাছাড়া রোগী মাত্র ১০ মিনিট সময় দিয়েছে। ফলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১০ এপ্রিল

from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/39VepWk

Post a Comment

0 Comments