অপারেশনের সময় জরায়ু কেটে ফেললেন চিকিৎসক, লাখ টাকায় মীমাংসা

https://ift.tt/eA8V8J
গাজীপুর, ১২ এপ্রিল - গাজীপুরের কালীগঞ্জ জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের ভুল চিকিসৎসায় মিশু বেগম (২৮) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে স্থানীয় তিন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে শুক্রবার (১০ এপ্রিল) গভীর রাতে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে এক লাখ টাকায় দফারফা করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের বেতুয়া গ্রামের মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মিশু বেগম সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বালীগাঁও গ্রামের জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ভর্তি হন। বিকেল ৩টার দিকে মিশু বেগমের অপারেশন করা হয়। অপারেশন করেন ওই হাসপাতালে অনকলে আসা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাইনুল ইসলাম। সিজারিয়ান অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ওই দিন রাত ৮টার দিকে মিশু বেগম মারা যান। এরপর স্থানীয় নামধারী তিন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী পরিবারকে ঘটনা মীমাংসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধ্য করে। ওই রাতেই এক লাখ টাকায় দফারফা শেষে রাত ১টার দিকে মিশুর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা। শনিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৯টায় তার দাফন সম্পন্ন হয়। এদিকে সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয়া নবজাতকটি (মেয়ে) এখন বাবা মিন্টুর কাছেই রয়েছে। এর আগে থেকে মিশু-মিন্টু দম্পতির ঘরে চার বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিকিৎসক মো. মাইনুল ইসলাম নিয়মিত কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে বসেন এবং অনকলে উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করেন। বছর দেড়েক আগে ওই চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় সেন্ট্রাল হাসপাতালে মারা যায় পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ভাদগাতী গ্রামের নওশাদের ছেলে। এ ব্যাপারে মিন্টুর ছোট ভাই লিটন মিয়া বলেন, চিকিৎসক অপারেশন করতে গিয়ে জরায়ু কেটে ফেলেছেন মিশুর। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আমার ভাবি মারা যান। কিন্তু আমরা গরিব পরিবার বলে স্থানীয় তিনজন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাপাচাপি করে। পরে উপায় না পেয়ে এক লাখ টাকায় মেনে নিই। চিকিৎসক মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে হাসপাতালে এসে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেন- বলেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এরপর জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক আসাদুজ্জামানের কাছে বিষয়টি নিয়ে টেলিফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। আপনি হাসপাতালে এসে কথা বলেন। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছাদেকুর রহমান আকন্দ বলেন, লোক মুখে ঘটনাটি শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি একেএম মিজানুল হক বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১২ এপ্রিল

Post a Comment

0 Comments