কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পে নানা অনিয়ম

https://ift.tt/eA8V8J
কক্সবাজার, ২৯ জুলাই - কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের দরপত্র অনুমোদন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে উঠেছে। সরকারের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন না মেনে একটি প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বেবিচকের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির বিরুদ্ধে। সরকারের বাস্তবায়ন, পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগও (ইএমআইডি) এই দরপত্রের মূল্যায়ন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বলছে, কোনও ধরনের অনিয়ম হয়নি। সরকারের সব নীতি অনুসরণ করেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তর করতে বর্তমান রানওয়ে সম্প্রসারণ করা হবে। এই বিমানবন্দরকে রিজিওনাল হাব হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আকাশপথে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবেও রয়েছে এই বিমানবন্দরটি। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বেবিচক কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়। বিমানবন্দরের বর্তমান ৯ হাজার ফুট দীর্ঘ রানওয়েকে মহেশখালী চ্যানেলের দিকে আরও এক হাজার ৭০০ ফুট সম্প্রসারিত করে মোট ১০ হাজার ৭০০ ফুটে উন্নীত করা হবে। বেবিচক সূত্র জানায়, সম্প্রসারিত হতে যাওয়া ১৭শ ফুট রানওয়ের ১৩শ ফুটই থাকবে সাগরের পানির মধ্যে। দেশে এই প্রথমবারের মতো সমুদ্রের ভেতরে ব্লক তৈরি করে রানওয়ে সম্প্রসারিত করা হবে। এজন্য ২০১৯ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে বেবিচক। শর্ত দেওয়া হয় সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর রানওয়ে নির্মাণের সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে। জানা গেছে, গত মার্চের শেষদিন পর্যন্ত ১০টি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র জমা পড়েছে। সূত্র জানায়, ১০টি প্রতিষ্ঠান এ কাজের জন্য দরপত্র জমা দিলেও একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার সুপারিশ করে বেবিচকের মূল্যায়ন কমিটি। যদিও এর আগে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে দুটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার সুপারিশ করা হয় এবং পরবর্তীতে একটি প্রতিষ্ঠান শাহজালালের কাজ পায়। কক্সবাজার বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে শুধু CRCC Harour CCECC JV নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার সুপারিশ করে বেবিচকের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারে আপত্তি রয়েছে সরকারের অন্যান্য দফতরের। গত ২৫ জুন ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে দরপত্র প্রক্রিয়া নিয়ে কথা উঠলে পরে তা সরকারের বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (ইএমআইডি) পাঠানো হয়। আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ইয়াবা ও সিএনজিসহ আটক ৫ সূত্র জানায়, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) সভায় দরপত্র মূল্যায়নের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্নে উঠেছে। পরবর্তী সময়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) মূল্যায়নেও এই দরপত্রে অসামঞ্জস্যতা ধরা পড়ে। ফলে বেবিচকের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান এ কাজের জন্য যোগ্য হবে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও এর কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়ার সুপারিশ করেছে বেবিচকের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। দরদাতা বিদেশি হলে টার্নওভারের সমর্থনে সংশ্লিষ্ট দেশের কোনও অনুমোদিত ব্যাংক কর্তৃক দরদাতার ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে ইস্যুকৃত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে বলে শর্তে উল্লেখ ছিল। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানকে বেবিচকের ক্রয় কমিটি সুপারিশ করেছে সেই প্রতিষ্ঠানটি চীনা হলেও তারা বাংলাদেশি একটি ব্যাংক থেকে গ্রান্টার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়েজউল্লাহ বলেন, যে প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতাসহ ৩-৪টি বিষয়ে আমাদের অবর্জাভেশন ছিল। আমরা সেটি ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, আমাদের যাচাই-বাছাই কমিটি যথার্থভাবে মূল্যায়ন করেছে। এখানে কোনও পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। একটি প্রতিষ্ঠানই দরপত্র যাচাই বাছাইয়ে নির্বাচিত হয়েছে। এটা নিয়ে কথা হচ্ছে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো কোয়ালিফাই করেনি, ফলে কিছু করার নেই। সুপারিশ করা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রস্তাবও দরপত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একটু বেশি হলেও আমরা বাতিল করে দিতে পারতাম। এখন এটি আর আমাদের হাতে নেই। কেবিনেট এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই কার্যকর হবে। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন এন এইচ, ২৯ জুলাই
https://ift.tt/2P5raFS

Post a Comment

0 Comments