ভারতের আর্থিক আক্রমণে কী জবাব দেবে চীন?

https://ift.tt/eA8V8J
বেইজিং, ০২ জুলাই- আপাতত আর্থিক খাতে ত্রিমুখী হামলা দিয়ে চীনকে মোকাবিলা করতে চাইছে দিল্লি। ৫৯টি চীনা মোবাইল অ্যাপ বাতিলের ঘোষণা ঘিরে হইচই শুরু হয়েছে ইতোমধ্যেই। বুধবার জানা গেল, তা আরও বর্ধিত হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে ভারতে থাকা চীনা বিনিয়োগ পাল্টা উত্তরও দিতে পারে এমন আশঙ্কা কারো কারো। পাশাপাশি রয়েছে প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতার প্রশ্ন। আনন্দবাজার পত্রিকা জানাচ্ছে, বুধবার বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর টুইটের হুমকি দিয়েছেন প্রতিপক্ষকে। তিনি লেখেন, চীনা সোশ্যাল মিডিয়া উইবো ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বার্তা স্পষ্ট, লাল দাগ (ধৈর্যের সীমা) পেরোলে, তার ফলও ভুগতে হবে। সীমান্তে যা শুরু হয়েছিল, তা ইতিমধ্যেই বহু দিকে ডালপালা ছড়িয়েছে। এবং হয়তো এটা নেহাতই শুরু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি জানান, ভারতের কোনো সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দরপত্রই দিতে পারবে না চীনা সংস্থা। এমনকি ভারতীয় কোনো সংস্থার সঙ্গে জোড় বেঁধেও নয়। প্রয়োজনে খতিয়ে দেখা হবে পুরোনো প্রকল্পও। নতুন করে দরপত্র চাওয়া হতে পারে সে ক্ষেত্রে। মন্ত্রীর দাবি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বদলানো হচ্ছে ওই সব টেন্ডারে যোগ দেওয়ার আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত শর্ত। যাতে নিজের জোরেই কাজ পেতে পারে ভারতীয় সংস্থা। ছোট-মাঝারি শিল্পেও চীনা সংস্থাগুলোকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানান। এ দিকে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলছেন, বিদেশি অ্যাপের ওপরে নির্ভরতা বন্ধ হওয়া জরুরি। চীনা অ্যাপ সরে যাওয়ার সুযোগে ফাঁকা হওয়া বাজার ধরতে দেশি স্টার্ট-আপগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। চীনা সংস্থা বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কারণে থার্মাল ক্যামেরা কেনার টেন্ডার বাতিল করেছে রেল মন্ত্রণালয়। চীনা সংস্থার সঙ্গে ফোরজি-অবকাঠামো গড়ার উপকরণ কেনার টেন্ডার বাতিলের পথে হাঁটছে টেলিকম দফতর। পত্রিকাটি বলছে, মোদি সরকারের এই আক্রমণাত্মক আর্থিক নীতিতে এক দিকে যেমন ভারতীয় শিল্পমহলের একাংশের মধ্যে বাড়তি সুযোগ পাওয়ার আশা দানা বাঁধছে, তেমনই বইছে আশঙ্কার চোরা স্রোত। প্রশ্ন উঠছে, শুধু দেশীয় সংস্থাকে দিয়ে হাইওয়ে তৈরি করাতে গিয়ে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ এবং গুণমানের সঙ্গে আপোস করতে হবে না তো? সুযোগ পাবে না তো শুধু গুটিকয় সংস্থা? যে স্টার্ট-আপকে নিত্যনতুন অ্যাপ তৈরির ডাক দিচ্ছেন মন্ত্রী, তাদের প্রথম সারির অনেক প্রতিষ্ঠানে আছে চীনা বিনিয়োগ। গাড়ি বুক করার ওলা, অনলাইনে বিল পরিশোধের পেটিএম, বাড়িতে বসে খাবার অর্ডার দেওয়ার জোম্যাটো কিংবা সুইগি, নিত্য বাজারের বিগ বাস্কেট কিংবা ফ্লিপকার্ট, বাচ্চাদের পড়ার অ্যাপ বাইজুস থেকে শুরু করে হোটেল বুকিংয়ের মেক মাই ট্রিপ সব জায়গায় আছে চীনা সংস্থার মোটা লগ্নি। চীন প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটলে, তাদের বেকায়দায় পড়তে হবে না তো? একই আশঙ্কা বিভিন্ন ভারী যন্ত্র, গাড়ি ও বৈদ্যুতিক পণ্যের যন্ত্রাংশ, বস্ত্র শিল্প ও ওষুধের কাঁচামাল ঘিরে। বন্দরে চীনা পণ্যকে বাড়তি খাতিরের জন্য যে উদ্বেগ শিল্পমহল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে, যদি তার বদলা নিতে চড়া শুল্ক চাপায় চীন? সে ক্ষেত্রে দেশীয় শিল্পেরই সমস্যা বাড়বে কি? এরই মধ্যে অবশ্য ভারতীয় কর্মীদের চিঠিতে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে সদ্য বাতিল হওয়া অ্যাপ টিকটক। সিইও কেভিন মেয়ারের দাবি, ভারতীয় গ্রাহক এবং কর্মীদের আবার ভালো অভিজ্ঞতা ফিরিয়ে দিতে সমস্ত রকম চেষ্টা করছে তারা। উল্টো দিকে, ই-কমার্স সাইটগুলোতে বিক্রি হওয়া পণ্যের উৎপাদনস্থল জানানোর যে বাধ্যবাধকতা সরকার সম্প্রতি চাপিয়েছে, সে বিষয়ে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। সূত্র : দেশ রূপান্তর এম এন / ০২ জুলাই
https://ift.tt/3dRBviv

Post a Comment

0 Comments