চায়ের পাতার নিচে কত কষ্ট, না দেখলে বুঝতে পারবেন না : সুমন

https://ift.tt/eA8V8J
হবিগঞ্জ, ২৮ মে - খেলার মাঠ দখল এবং চারা লাগানোকে কেন্দ্র করে মালিকপক্ষের বাড়াবাড়িতে গত ৪ মার্চ থেকে দীর্ঘ প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ থাকা হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমা চা বাগানের শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। মালিকপক্ষের সঙ্গে বিরোধ না মেটা পর্যন্ত এই বাগানের শ্রমিকদের পাশে সর্বাত্মকভাবে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ব্যারিস্টার সুমন বলেন, যতদিন এই সমস্যা ঠিক না হবে ততদিন আমি চা শ্রমিকদের পাশেই থাকব। সাধ্যমতো তাদের খাবারের ব্যবস্থা করব। পূর্ব প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই রেমা চা বাগানের অসহায় শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন সুমন। অসহায় শ্রমিকদের মাঝে তিনি প্রায় দুই টন চাল, চার বস্তা ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। অর্ধাহারে অনাহারে থাকা অসহায় হাজার খানেক চা শ্রমিকের পাশে দাঁড়িয়ে বুধবার (২৭ মে) ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বলেন, চায়ের পাতার নিচে যে কত কষ্ট লুকিয়ে আছে তা না দেখলে বুঝতে পারবেন না। ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, চা শ্রমিকদের বকেয়া বেতন না দিয়েই কথা কাটাকাটির জেরে চা বাগানের মালিক অনেকদূর চলে গেছেন। উনি কি ফিরে আসবেন, চা শ্রমিকদের দুর্দশা দেখবেন নাকি কষ্ট করে না খেয়ে মারা যাবে এসব শ্রমিক। চায়ের বাগানের মালিক আপনি যেখানেই থাকুন আসুন আমরা কথা বলি, শ্রমিকদের প্রতি ক্ষোভে আপনার বুকের চাপা পাথর সরাবেন কিনা, শ্রমিকদের প্রতি একটু দয়া করবেন কিনা। তিনি বলেন, শ্রমিকরা ভাবছে এই করোনার মাঝে তাদের পেটের ক্ষুধা নিবারণ হলে বেঁচে থাকবেন। তারা করোনার চেয়ে খাবারের অভাবেই মারা যাবেন। তাই মালিক হিসেবে শ্রমিকদের পাশে এসে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিন। রেমা চা বাগানের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা যায়, বাগানের মালিকদের বিরুদ্ধে শ্রমিক শোষণ-নিপীড়নের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শুধু তাই নয়, মজুরি এবং উৎসবভাতা বাবদ প্রায় প্রতিটি শ্রমিকের টাকা বকেয়া রয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে। এরই মধ্যে গত ৪ মার্চ, চা শ্রমিকদের খেলার মাঠ দখল করে বাগান ব্যবস্থাপক চারা লাগাতে উদ্যত হলে চা শ্রমিকদের সঙ্গে তার বিরোধ হয়। এই বিরোধের জের ধরে বাগান ব্যবস্থাপক চুনারুঘাট থানায় অভিযোগ করলে ৫ মার্চ পুলিশ তদন্ত করতে বাগানে আসে। এতে ক্ষেপে যায় শ্রমিকরা। এরপর ৬ মার্চ বাগান ব্যবস্থাপকের সাথে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে শ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বাগানের সাবেক পঞ্চায়েত মানিক দাস ও ইউপি সদস্য নির্মল দেবসহ ২৪ জনকে আসামি করে বাগান কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করে এবং একইসাথে বাগান বন্ধ করে দিয়ে তালা দিয়ে চলে যায়। বাগান কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তে চরম দুরবস্থায় পড়েছেন শ্রমিকরা। কর্ম হারিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। অচলাবস্থা না কাটলে অন্য বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। কিন্তু করোনা লকডাউনে তাদের খাওয়াসহ জীবন ধারণে বেশ অসহায় হয়ে পড়েছেন। এরপর গত ৮ মার্চ, শ্রমিকদের খেলার মাঠ দখল, বকেয়া বেতন ও মামলা দিয়ে হয়রানি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন চা শ্রমিকরা। ওইদিন সকালে রেমা চা বাগান থেকে প্রায় ১৫ মাইল রাস্তা হেঁটে উপজেলা সদরে এসে এ বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভরত চা শ্রমিকরা উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবস্থান নিলে চুনারুঘাট থানার ওসি শেখ নাজমুল হক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান মহালদারসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের আশ্বাস দেন এবং ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৮ মে
https://ift.tt/3eufcjJ

Post a Comment

0 Comments