দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল-অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

https://ift.tt/eA8V8J
বরিশাল, ১৪ এপ্রিল - বরিশাল জেলার দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হতদরিদ্র জেলেদের চাল ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়রা ওই দুই চেয়ারম্যানের শাস্তি দাবি করেছেন। পাশাপাশি ওই দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন- জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আন্দারমানিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম এবং মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু হাসানাত জাপান। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীরহাট থানা পুলিশের ওসি আনিসুল ইসলাম জানান, জেলেদের প্রণোদনার চাল কম দেয়ার অভিযোগে আন্দারমানিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কাজীরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শিমুল রানী পাল। ১৩ এপ্রিল তিনি লিখিত অভিযোগটি দেন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম তার ইউনিয়নে একমাসে ৭২৩ জন জেলের মাঝে বিতরণের জন্য জনপ্রতি ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। তবে গত ৯ এপ্রিল চেয়ারম্যান ৩৮৪ জন জেলেকে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। অর্থাৎ তিনি মাথাপিছু ১০ কেজি করে মোট ২ হাজার ৮৪০ কেজি চাল আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ওসি আনিসুল ইসলাম জানান, এ ধরনের বিষয়গুলো সাধারণত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে তদন্ত করা হয়। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগটি জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এদিকে মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু হাসানাত জাপানের বিরুদ্ধে প্রায় ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি চাল বিতরণের আগে ইউপি চেয়ারম্যান গুদাম থেকে চাল পরিবহনের নাম করে প্রতি জেলের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে ১৬ মাসে ২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। নাজিরপুর ইউনিয়নের জেলে জাবুল হোসেন জানান, ইউনিয়নে ৩০৯ জন কার্ডধারী জেলে রয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান আবু হাসানাত জাপান বিগত ৪ বছরের ৪৮ মাসের মধ্যে মাত্র ১৬ মাসের চাল বিতরণ করে বাকি ৩২ মাসের প্রায় ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া চাল বিতরণের আগে ইউপি চেয়ারম্যান গুদাম থেকে চাল পরিবহনের নাম করে প্রতি জেলের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে ১৬ মাসে ২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। চাল কম দেওয়া এবং টাকা নেওয়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই চেয়ারম্যান তাদের বিভিন্নভাবে অপমান অপদস্থ করেন এবং কার্ড বাতিলের হুমকি দেন। চেয়ারম্যান আবু হাসানাত জাপানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলেদের পক্ষে আলী আজম, কবির সিকদার, মকবুল, মোশারেফসহ আট জেলে সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুভ্রা দাস জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মাহমুদুল হাসানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হাসানাত জাপান জেলেদের চাল এবং টাকা অত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, নিয়ম মেনেই জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে। নাজিরপুর ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, চেয়ারম্যান আবু হাসানাত জাপানের বিরুদ্ধে হতদরিদ্র জেলেদের চাল ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বর্তমানে করোনাভাইরাস শহর থেকে গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্রদের ত্রাণের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান হাসানাত জাপানের বিরুদ্ধে। ত্রাণ না দিয়ে তিনি তা আত্মসাৎ করছেন। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৪ এপ্রিল

Post a Comment

0 Comments